
সাধারণত সিস্ট নিয়ে অনেক জন অনেক রকমের কথাবার্তা বলে থাকে । আবার অনেকেই জানেনা সিস্ট কাকে বলে । এছাড়াও আজকের বিস্তারিত আলোচনায় থাকছে , সিস্ট কি ? সিস্ট কি টিউমার? সিস্ট দূর করার উপায়? সিস্ট হলে কি সমস্যা হয়? সিস্ট এর ছবি, সিস্ট এর ঔষধ? সিস্ট হলে কি বাচ্চা হয়? সিস্ট থাকলে কি বাচ্চা নেওয়া যায়? এই সমস্ত নানা রকমের প্রশ্নের উত্তর আজকে এই বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানানো হবে । যারা এই সকল প্রশ্ন নিয়ে বিভিন্ন রকমের চিন্তায় ভুগছেন তাদের জন্য আজকের এই বিস্তারিত আলোচনা । এ সকল প্রশ্নের সমস্ত উত্তর নিচে নিম্নলিখিত করা হয়েছে , ধৈর্য সহকারে পরে আপনার সমস্যাগুলোর সাথে মিলিয়ে এর সমাধান কিভাবে করতে হয় আসুন জেনে নেয়া যাক ,
সিস্ট কি?
মূলত আমরা এটাও জানি না যে সিস্ট কি । সিস্ট ভালো সাধারণত দেহের যেকোনো অংশে এক ধরনের তরল বা শক্ত পদার্থ দিয়ে ভরা থলি । সাধারণত এগুলোর বিভিন্ন রকমের হতে পারি ছোট এবং বড় । সিস্ট সাধারণত নিরীহ হয় , তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলো মারাত্মক হতে পারে ।
সিস্ট কি টিউমার?
যদি এক কথা বলা যায় তাহলে না , সিস্ট কোনো টিউমার না । এটি সাধারণত টিউমারের মত দেখালেও এটি টিউমার না । যদি আপনার টিউমার হয় তাহলে সাধারণত টিউমার গুলির কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ভাড়া থাকে । আর এটা দেখেই বুঝতে হবে আপনার টিউমার নাকি সিস্ট ।
দেহের যেকোনো জায়গায় এটি হতে পারে । সিস্ট দেহের যেকোনো অংশে হোক না কেন এটি দেহের এক ধরনের তরল বা শক্ত পদার্থ দিয়ে তৈরি হয় । যা অনেকের মনে ভয়ের সৃষ্টি হয় , কেননা এটি সাধারণত টিউমারের মত দেখতে তবে এটি টিউমার নয় । তাই আপনি নিশ্চিতভাবে থাকতে পারেন ।
সিস্ট হলে কি সমস্যা হয়?
মূলত সিস্ট আকার বা লক্ষণ এর উপর নির্ধারণ করে এর সমস্যার । যদি সৃষ্ট গুলো ছোট ছোট থাকে তাহলে এমনি এমনি সেরে যায় , আর যদি দেখা যাচ্ছে এগুলো অনেক বড় হয়েছে তাহলে এর সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন ।, স্তনসিস্ট সৃষ্ট গুলি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে ডিম্বাশয় গুলি বিপদজনক হতে পারে কারণ এগুলো ফেটে যেতে পারে এবং রক্তপাত এবং সংক্রমণ হতে পারে . । এছাড়া আরো কিছু সাধারণ সমস্যা রয়েছে সেগুলো নিচে নিয়ে লিখিত করা হলো,,
যেমন ,
- ব্যাথা সৃষ্টি হতে পারে , বিশেষ করে যখন তারা বড় হয় এবং সংক্রমিত হয় ।
- সিস্ট ফুলে যেতে পারে । সাধারণত এগুলো ত্বকের নিচে থাকে ।
- এ সকল সিস্ট গুলো ফেটে যায় , সংক্রমণ বা ক্যান্সার তৈরি হতে পারে এ থেকে ।
সিস্ট থাকলে কি বাচ্চা নেওয়া যায়?
এ ধরনের সমস্যা থাকলে বাচ্চা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে । কেননা এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে বিভিন্ন সংক্রমণ জনিত বা হরমোনাল জাতীয় সমস্যা হয়ে থাকে । আর এই সমস্যাগুলো ডিম্বাশয় বা গর্ভধারণের বাধা প্রয়োগ করে । এজন্যই বাচ্চা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে । তবে এর বিস্তারিত আলোচনা নিচে করা হয়েছে সেগুলো দেখে নিতে পারেন ।
সিস্ট হলে কি বাচ্চা হয় না?
আসলে এটা বলা ঠিক হবে না যে সিস্ট হলে বাচ্চা হয় না তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় যে এ সকল সমস্যা হলে বাচ্চা হয় আবার নাও হতে পারে । কেননা এই সিস্ট গুলো গর্ভধারণের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে । আসুন এর বিস্তারিত আলোচনা করি ,
সাধারণত সিস্ট গুলি গর্ভধারণের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে যার কারণে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না । তাই আসুন সেই জটিলতা গুলো দেখে নেই ,
- ডিম্বাশয়ের মাঝে যদি সিস্ট হয় তাহলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কম থাকে । কেননা এগুলো ডিম্বাশয়ের স্বাভাবিক কাজকে ব্যাহত করতে পারে যার ফলে ডিম্বাণু পরিপক্ক হতে পারে না ।
- হরমোনাল সিস্টগুলো গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমাতে পারে কেননা। প্রোজেস্টেরনের মাত্রা কমাতে পারে যা গর্ভধারণের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন ।
- এরপর আরেকটি সাধারণ লক্ষণ রয়েছে সেটি হচ্ছে সংক্রমণের কারণে । সংক্রমণ ডিম্বাশয় বা অন্যান্য প্রজনন অঙ্গগুলির ক্ষতি করতে পারে যা গর্ভধারণের হস্তক্ষেপ হতে পারে । আর এই হস্তক্ষেপের জন্য গর্ভধারণ এর সমস্যা দেখা দেয় ।
সিস্ট দূর করার উপায় ?
সাধারণত সিস্ট দূর করার উপায় নির্ভর করে এর ধরন বা আকারের উপর । সিস্ট যদি ছোট হয় তাহলে সাধারণত চিকিৎসার কোন প্রয়োজন করে না . কেননা এই সকল সিস্ট গুলো এমনি এমনি ছেড়ে দেয় . আর যদি সৃষ্ট গুলো বড় হয় তাহলে বিভিন্ন চিকিৎসার মাধ্যমে সিস্ট গুলো দূর করা যায় .
জেনে নেয়া যাক সে সকল চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো । যেগুলোর মাধ্যমে সৃষ্টি দূর করা যায়
- সাধারণত একটি মাধ্যম হচ্ছে ওষুধ এর মাধ্যমে এটি সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা যায় ।
- আরেকটি মাধ্যম হচ্ছে সার্জারি । সার্জারির মাধ্যমে এই সমস্যাটি সমাধান করা যায় ।
- এছাড়া আর একটি মাধ্যম রয়েছে সেটি হচ্ছে আল্ট্রা সাউন্ড – নির্দেশিত শুকানো ( ইউএস০ নির্দেশিত এসপিরেসন ) ইলেক্ট্রোসিস্টোটমি এবং লেজার থেরাপি ।
সাধারণত আমরা জানতে পারলাম এই তিনটি চিকিৎসার ওপর ভিত্তি করে এই সমস্যাটি সমাধান করা যেতে পারে । এছাড়াও কিছু ওষুধের মাধ্যমে এই সমস্যাটি সমাধান করা যায় । আসুন জেনে নেয়া যাক সে সফল ওষুধের নাম গুলো ,
সিস্ট এর ঔষধঃ
- ফাংশনাল সিস্ট: এই সিস্টগুলি সাধারণত ঋতুচক্রের সময় দেখা দেয় এবং সাধারণত নিরীক্ষণের প্রয়োজন হয় না। যদি সিস্টগুলি ব্যথা বা অস্বস্তি সৃষ্টি করে, তাহলে সেগুলি ওষুধের মাধ্যমে বা সার্জারির মাধ্যমে অপসারণ করা যেতে পারে।
- পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (PCOS): এই অবস্থায় ওভারিতে একাধিক সিস্ট থাকে। PCOS এর চিকিৎসার জন্য ওষুধ, জীবনধারা পরিবর্তন এবং কখনও কখনও সার্জারি ব্যবহার করা যেতে পারে।
- অ্যান্ডমেট্রিওসিস: এই অবস্থায় জরায়ুর বাইরে এন্ডোমেট্রিয়াম (জরায়ুর আস্তরণ) বৃদ্ধি পায়। অ্যান্ডমেট্রিওসিসের চিকিৎসার জন্য ওষুধ, সার্জারি এবং কখনও কখনও অন্যান্য চিকিত্সা পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ডার্ময়েড সিস্ট: এই সিস্টগুলি চুল, ত্বক, চর্বি এবং অন্যান্য টিস্যু দিয়ে তৈরি হয়। ডার্ময়েড সিস্টগুলি সাধারণত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়।
- সিস্ট এডোনোমা: এই সিস্টগুলি ওভারির এন্ডোমেট্রিয়াম থেকে তৈরি হয়। সিস্ট এডোনোমার চিকিৎসার জন্য ওষুধ বা সার্জারি ব্যবহার করা যেতে পারে।
সিস্ট এর ছবি